Header Ads

Header ADS

ফেরেশতা সম্পর্কে আকিদা।

ফেরেশতা সম্পর্কে আকিদা।
ক- ফেরেশতাগণ আল্লাহর সম্মানিত বান্দা । (আল-আনবিয়াঃ২৬)
খ- তাদের দেহ নূর দ্বারা সৃষ্টি ।(মুসলিম ২৯৯৬)। তবে হুকুমটি অধিকাংশের দিল লক্ষ করে কেননা ইবলিস ফেরেশতার অন্তর্ভুক্ত ছিল ( বাকারা: 34 ) এবং তার সৃষ্টি ছিল আগুন থেকে যেমনটি বলেছেন ইবনে মাসুদ, ইবনে আব্বাস ।(তাফসিরে তাবারিঃ ১/৪৮২) ইমাম কুরতুবি বলেন ইবলিস ফেরেশতার অন্তর্ভুক্ত এটাই অধিকাংশের মত । (তাফসিরে কুরতুবি ১/২৯৪)
গ- তারা আল্লাহর আদেশ পালনে বাধ্য ।(তাহরিম-৬) এই হুকুমটিও অধিকাংশের দিল লক্ষ করে কেননা ইবলিস ফেরেশতাদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরেও আল্লাহর অবাধ্যতা করেছিলো ।
ঘ- ফেরেশতাদেরকে পুরুষ বা নারী কোনটাই বলা যাবে না।
নারি বলা কুফুর ।(আন নাজম-২৭ / আল ইসরা-৪০ / জুখরুফ-১৯)
পুরুষ বলা যাবে না কেননা কোরআন ও হাদিসে এই মর্মে কোন বর্ণনা নেই।
কেউ প্রশ্ন করতে পারেন কোরআন ও হাদিসে তো বিভিন্ন জায়গায় ফেরেশতাদের ক্ষেত্রে পুরুষের সর্বনাম ব্যবহার করা হয়েছে।
উত্তরঃ পুরুষের সর্বনাম যেমন ব্যবহার হয়েছে তেমনি নারীর সর্বনামও ব্যবহার হয়েছে । (إذ "قالت" الملائكة يا مريم) (আল ইমরান-৪৫) এমনকি আল্লাহর ক্ষত্রেও পুরুষের সর্বনাম ব্যবহার হয়েছে। অথচ আল্লাহর ক্ষেত্রে অসম্ভব পুরুষ বা নারী শব্দ ব্যবহার করা ।
( এই বিষয়ে কেউ আর বিস্তারিত জানতে চাইলে তাফসিরে রাজির সূরা ফাতেহার তাফসিরটা দেখতে পারেন )
ঙ- বিভিন্ন ফেরেশতা বিভিন্ন দায়িত্বে রয়েছেন। যেমনঃ
১- জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) কে বিভিন্ন নবীদের নিকট ওহী নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব দিয়েছেন।
২- মিকাইল (আলাইহিস সালাম) কে বৃষ্টি এবং উদ্ভিতের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে।
৩- ইসরাফিল (আলাইহিস সালাম) কে শিঙাতে ফুঁক দেওয়ার দায়িত্ত দেওয়া হয়েছে।
৪- মালাকুল মাউত (যার নাম হল "আজরাইল" (আল আজামাতু - লিল আস ফাহানি - ৪৪৩ ) তাকে রূহ কবজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
একটা জরুরি বিষয়ঃ
জিবরাঈল, মিকাইল, ইসরাফিল, আজরাইল, শবগুলো থেকে জিবরা, মিকা, সারাফি, আজরা, অংশ গুলোর অর্থ হল “বান্দা”।
এবং ঈল (إيل) শব্দেটির অর্থ হল আল্লাহ। সুতরাং জিবরাঈল, মিকাইল, এ জাতীয় শব্দের অর্থ হল “আল্লাহর বান্দা” । ( তাফসিরে তাবারি ২/২৯৬ / ফাতহুল বারি ৮/১৬৫ )
৫- আটজন ফেরেশতা কেয়ামতর দিন আল্লাহর আরশকে বহন করে রাখেবন। (আল হাক্কাহ-১৭)
৬- কিছু ফেরেশতা আছেন যারা বান্দার প্রতিটি কাজ এবং কথা লিবিবদ্ধ করেন। বিশুদ্ধ মত অনুসারে প্রত্যেক বান্দার সাথে চারজন ফেরেশতা থাকেন দুইজন দিবসে, দুইজন রাতে । (কাহাফ-৪৯ / ইনফিতার-১১)
৭- মুনকার ও নাকির নামক দুইজন ফেরেশতা আছেন। তাদের আকৃতির ভয়াবহতার কারনে এই শব্দে তাদের নাম করণ করা হয়েছে। যখন কেউকে দাফন দেওয়া হয় তখন তারা দুইজন এসে প্রশ্নোত্তর করেন। বাইহাকির রেওয়াতে আছে “তাদের চোখ হবে ভয়াবহ বিজলীর ন্যয়। আর তাদের আওয়াজ হবে প্রচণ্ড গর্জনের ন্যয়”। (আল ইতিকাদ লিল বায়হাকি-২২২) (আল্লাহ আমাদের সকলের জন্য এই মারহালাকে সহজ করেন দিন। আমীন।)
৮- কিছু ফেরেশতা যারা আজরাইল (আলাইহিস সালাম) এর সহযোগী । (আন নাহল-২৮)
৯- কিছু ফেরেশতা আছেন জাহান্নামীদেরকে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্তে। (আল মুদদাসসির-৩০)
১০- সম্মানিত লিপিবদ্ধকারী ফেরেশতাগণ ছাড়াও এমন কতক ফেরেশতাগণ আছেন আদম সন্তানদের রক্ষাকারী হিসাবে । (আর- রাআদ-১১)
১১- কিছু ফেরেশতা আছেন যারা আল্লাহর আরশকে বেষ্টন করে রাখবেন। (আজ জুমার-৭৫)
১২- কিছু ফেরেশতা বান্দাদের বিভিন্ন কাজের আঞ্জাম দিয়ে থাকেন। তাদের সংখ্যা অগণিত। (আল মুদ্দাসসির-৩১)
ইমাম রাজী রঃ ফেরেশতা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ভাবে চারটি আকিদা উল্লেখ করেনঃ
১ – এই ঈমান রাখতে হবে , ফেরেশতার অস্তিত্ব আছে ।
২ – তারা মাসুম ।
৩ – তারা হলেন বান্দার মাঝে এবং আল্লাহর মাঝে “মাধ্যম” ।
৪ – আল্লাহর পক্ষ থেকে বিভিন্ন আসমানি কিতাব বিভিন্ন নবীদের নিকট পৌঁছেছে ফেরেশতার মাধ্যমে ।

No comments

Powered by Blogger.