Header Ads

Header ADS

দোয়াতে উপরে হাত উঠানোর অর্থ কী আল্লাহ উপরে আছেন ? এবং শায়েখ উছাইমিনের দুঃখজনক অবস্থা

দোয়াতে উপরে হাত উঠানোর অর্থ কী আল্লাহ উপরে আছেন ? এবং  শায়েখ উছাইমিনের দুঃখজনক অবস্থা

ইমাম নববী রঃ এর প্রসিদ্ধ হাদিসের কিতাব “রিয়াদুস সালেহিনের" ২৮১ নাম্বার হাদিসের ব্যাখ্যাতে শায়েখ উছাইমিন লিখেনঃ আল্লাহ উপরে আছেন এটা স্বভাবজাত একটা বিষয় । যা বুঝার জন্য কোন দলিল বা তেমন কষ্ট-ক্লেশের প্রয়োজন হয় না । যারা আল্লাহ আসমানে আছেন এটাকে অস্বীকার করেন ( তাদের জন্য আমি আল্লাহর নিকট “হেদায়েত” প্রার্থনা করি ) তারা যখন দোয়া করতে আসেন তখন তারা তাদের হাত কোন দিকে উঠান ? আসমানের দিকেই তো উঠান। হায় আল্লাহ !!! দোয়াতে তাদের উপরে হাত তোলাই প্রমাণ করে , আল্লাহর বিষয়ে তাদের আকিদা মিথ্যা । এই বাতিল ও নষ্ট আকিদার কারনে তাদের উপর কুফুরির আশঙ্কা হচ্ছে ।
মজার বিষয় হলঃ
শায়েখ উছাইমিন আল্লাহ উপরে থাকার বিষয়ে যেই দলিল দিয়েছেন এবং যার হাদিসের কিতাবের ব্যাখ্যা লিখতে গিয়ে এই কথা করেছেন , সেই ইমাম নববী প্রায় আজ থেকে সাতশত বছর পূর্বে খুব জোরালো ভাষায় এই দলিলের সমালোচনা করে গেছেন।
ইমাম নববী রঃ বলেনঃ আল্লাহ হলেন ঐ মহান স্বত্বা যার অভিমুখে হয়ে কোন দোয়াকারী তার নিকট দোয়া করেন যেমন কোন নামাজি ব্যক্তি কেবলামুখী হয়ে নামাজ আদায় করেন সুতরাং আসমানের অভিমুখে হয়ে দোয়া করার অর্থ এটা নয়, আল্লাহ আসমানে সীমাবদ্ধ যেমনি ভাবে কাবা-মুখী হয়ে নামাজ পড়ার অর্থ এটা নয়, আল্লাহ কাবাতে সীমাবদ্ধ । বরং আসমান হল দোয়াকারীর কেবলা আর কাবা হল নামাজীর কেবলা । ( আল মিনহাজ ৫/৩৩ )
ইমাম নববীর আগের শতাব্দীর প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস ইমাম কাজী ইয়াজ বলেনঃ আসমান হল দোয়াকারীর কেবলা আর কাবা হল নামাজীর কেবলা । কাবার অভিমুখে নামাজ পড়া দ্বারা যেমন এটা বুঝা যায়না, আল্লাহ কেবলার দিকে আছেন, তেমনি আসমানের অভিমুখে দোয়া ও ইশারার অর্থ এটা নয়, আল্লাহ আসমানে আছেন । ( আল মুলিম - ১/১৭৭ )
ইমাম নববীর যুগের আরেক মুহাদ্দিস ইমাম কুরতুবি বলেনঃ আসমানের দিকে হাত উঠিয়ে দোয়া করার কারন হল আসমান হল ওহী অবতীর্ণ হওয়ার স্থান । (তাফসিরে কুরতুবি, সূরা মূলক -১৬ )

শায়েখ উছাইমিন ইমাম ইবনে তাইমিয়ার যেই ভুল আকিদা আমাদের গিলাতে চাচ্ছেন সেই ইবনে তাইমিয়ার ওস্তাদ ইবনে দাকিক আল - ঈদ "শারহুল ইলমাম" কিতাবে বলেনঃ দৃষ্টিকে আসমানের দিকে উঠানো দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে দোয়ার কেবলা এবং ওহী অবতীর্ণ হওয়ার স্থানের অভিমুখী হওয়া ।
ইবনে তাইমিয়ার পরের যুগের প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস যার "বুলুগুল মারাম" পড়ে আমাদের দেশের আহলে হাদিস ভাইরা সহি সালাত শিখে বলে দাবি করেন, সেই ইবনে হাজার বলেনঃ দৃষ্টিকে আসমানের দিকে উঠানো দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে দোয়ার কেবলা এবং ওহী অবতীর্ণ হওয়ার স্থানের অভিমুখী হওয়া । ( আতালখিসুল হাবির- ১২১ )
একজন ব্যক্তি আসমানে হাত উঠিয়ে দোয়া করেন আবার এটা অস্বীকার করে যে আল্লাহ আসমানে সীমাবদ্ধ নয় । এই বিপরীত মুখী বিশ্বাস দেখে শায়েখ উছাইমিন যতটুকু অবাক হয়েছেন, আমি তার এই ব্যাখ্যা পড়ে তার থেকেও বেশী অবাক হয়েছি । কেননা তিনি বইটির ভূমিকাতে ইমাম নববী ও বইটির অনেক প্রশংসা করেন এবং এর ব্যাখ্যা সুন্দর ভাবে শেষ করার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়াও করেন । অথচ তিনি নিজেই বইটিতে এমন কথা লিখে রেখেছেন যার কারণে খোদ বইটির লেখক ইমাম নববী সহ, উল্লেখযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য বহু মুহাদ্দিস গোমরাহ সাব্যস্ত হয় । নাউজুবিল্লাহ । এমন বড় ব্যক্তি থেকে এমন অজ্ঞতা এবং অসতর্কতা মোটেও কাম্য নয় । নাউজুবিল্লাহ।
বাংলাদেশে আজ যারা শায়েখ উছাইমিন, শায়েখ বিন বাজ , শায়েখ আলবানীর, দোহাই দিয়ে সাধারণ ছেলেদের ইমাম ইবনে তাইমিয়ার ভুল আকিদা গিলাচ্ছেন তাদের বলছি, যারা বুঝে-শুনে আপনাদের ভুল আকিদা বর্জন করেছেন তাদের ক্ষেত্রে গোমরাহ, জাহমিয়া, বাতিল, শব্দ ব্যবহারে একটু সতর্ক হন । এবং বলার আগে একটু চিন্তা করুন আপনার এই শব্দগুলো কোথায় গিয়ে পড়
ছে । কেননা আমরা হলাম পাঠক আর তারা হল লেখক ।

বেলাল বিন আলী 

No comments

Powered by Blogger.